নওয়াব ফয়েজুন্নেছা চৌধুরানী- জীবনকালঃ (১৮৩৪ - ১৯০৪ ইং)। এশিয়া মহাদেশের সর্বপ্রথম মহিলা নওয়াব ফয়েজুন্নেছা চৌধুরানীর জন্ম হয়েছিল ১৮৩৪ সালে লাকসামের পশ্চিমগাঁয়ে। তিনি ছিলেন একাধারে কবি, সমাজসেবক, নারী শিক্ষার অগ্রনায়িকা। বিশেষ করে নারী শিক্ষার অগ্রগতির জন্য তাঁর অবদান ছিল অসামান্য। তিনি অনেক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ ও রাস্তাঘাট নির্মান করেন যার মাঝে কুমিল্লার "নওয়াব ফয়েজুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়" ও লাকসামের "নওয়াব ফয়েজুন্নেছা সরকারি কলেজ" অন্যতম। বলা হয়ে থাকে ১৮৯৪ সালে তিনি হ্বজ্জ পালন করেন এবং মক্কায় একটি মাদ্রাসা ও মুসাফিরখানা স্থাপন করেন। তিনিই এশিয়া মহাদেশের সর্বপ্রথম মহিলা নওয়াব। তিনি ১৮৮৯ সালে রানী ভিক্টোরিয়ার কাছ থেকে নওয়াব উপাধি লাভ করেন। মৃত্যুর আগে তাঁর সম্পদের বিশাল একটি অংশ দিয়ে গেছেন দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য যা বর্তমানে নওয়াব ফয়েজুন্নেছা ট্রাস্ট পরিচালনা করে। ১৯০৩ সালে বাংলার এই মহীয়সী নারী মৃত্যুবরন করেন। |
|
নওয়াব ফয়জুন্নেছা সরকারি কলেজ বৃহত্তর লাকসাম অঞ্চলের একমাত্র উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই অঞ্চলে শিক্ষার প্রসারে ও আর্থ সামাজিক উন্নয়নে এ প্রতিষ্ঠান অগ্রণী ভুমিকা পালন করে যাচ্ছে। বাংলার মহিয়সী নারী ও উপমহাদেশের প্রথম মহিলা নবাব বেগম ফয়জুন্নেছা চৌধুরী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত এ শিক্ষাঙ্গন আজ কলের আবর্তে অবৈতনিক ফয়েজিয়া মাদ্রাসা থেকে ১৯৪৩খ্রি: ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ এবং ১৯৬৪ খ্রি: এটি নওয়াব ফয়জুন্নেছা ডিগ্রি কলেজে রূপান্তরিত হয়। ১৯৮২খ্রি: ১মে বাংলাদেশ সরকার এটিকে জাতীয়করণ করে নওয়াব ফয়জুন্নেছা সরকারে কলেজ হিসাবে। বর্তমানে এর ছাত্রছাত্রী সংখ্যা ৫হাজারেরও অধিক। কলেজে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় উচ্চমাধ্যমিক, ডিগ্রি (পাস) ছাড়াও ৭টি (ইংরেজি, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থ্যাপনা, গণিত ও প্রাণিবিজ্ঞান) বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু আছে। ফয়জুন্নেছা প্রতিষ্ঠিত দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়ে ওঠা এ শিক্ষায়তন কেবল কুমিল্লা এলাকাতেই নয়, গোটা বাংলাদেশের জন্য আজ গর্বের বিষয়।
|
চারদিকে প্রাচীরঘেরা নওয়াব ফয়জুন্নেছা সরকারি কলেজের অভ্যন্তরে নিরিবিলি ও নিরাপদ পরিবেশে এর কার্যক্রম সুষ্টভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে। কলেজটিতে আধুনিক ও যুগোপযোগী শিক্ষাদানের জন্য সমৃদ্ধ লাইব্রেরি, পাঠাগার, কম্পিউটার ল্যাবরেটরি, টাইপ ল্যাব, সাইন্স ল্যব ও একটি খেলার মাঠ রয়েছে।
|
শুরুর দিকে এটি হাই মাদরাসা হিসেবে চালু করা হয়। পরে ১৯২০ সাল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ১৯৪৩ সালে ডিগ্রি পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার সুযোগ পান। ১৯৮২ সালের ১ মে কলেজটি সরকারীকরণ এবং ১৯৯৮ সাল থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত স্নাতক (সম্মান) বিভাগ চালু করা হয়। অনুষদ সমূহ - উচ্চ মাধ্যমিক : মানবিক বিভাগ, ব্যবসায় শিক্ষা, বিজ্ঞান বিভাগ। স্নাতক : বি.এ, বি.এস.এস, বি.এস.সি, বি.বি.এস। স্নাতক (সম্মান): অর্থনীতি, ইংরেজি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, প্রাণিবিদ্যা, গণিত, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা।
|
|
বর্তমান অধ্যক্ষ প্রফেসর বাবুল চন্দ্র শীল এ কলেজের কর্ণধার রুপে দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে অদ্যাবধি ক্লান্তিহীনভাবে কর্মপ্রচেষ্টার মাধ্যমে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে নানা দিক থেকে সাফল্যমন্ডিত করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। এছাড়া কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মিতা সফিনাজ শিক্ষার্থীদের কল্যানে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
|